দু’দিনের সংক্ষিপ্ত সফরে ঢাকায় এসেছেন বিশ্বখ্যাত অডিও ব্র্যান্ড ‘জাব্রা-জিএন’ -এর ভারতীয় অঞ্চলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক পিটার জয়াসিল্যান। সংক্ষিপ্ত ব্যবসায়িক সফরের মাঝে সময় দিয়েছেন রায়ান্সকে।
জানিয়েছেন বাংলাদেশে ব্র্যান্ডটির সম্ভাবনার কথা। ক্রমবর্ধমান অর্থনীতির দেশ হিসেবে খুব দ্রুতই আইটি খাতে এগিয়ে যাবে বাংলাদেশ, মত জয়াসিল্যানের। কথা বলেছেন টেক ইকোনমির ভবিষ্যৎ নিয়েও। রায়ান্সের সাথে একান্ত সাক্ষাৎকারে উঠে আসে এসব প্রসঙ্গ। সাক্ষাৎকারটি নিয়েছে টেক সাইটটির প্রতিনিধি মোস্তফা জামান, সঙ্গে ছিলেন বায়েজিদ হোসেন।
রায়ান্স: বাংলাদেশে কবে এসেছে জাব্রা?
পিটার জয়াসিল্যান: প্রায় এক বছর হলো বাংলাদেশের টেক মার্কেটে এসেছে জাব্রা-জিএন।
রায়ান্স: বাংলাদেশের টেক মার্কেট সার্বিক দিক থেকে কেমন মনে হচ্ছে।
পিটার জয়াসিল্যান: অবশ্যই, বাংলাদেশের মার্কেট দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলেছে। এখানকার অর্থনীতি খুব অল্প সময়ে বেশ শক্তিশালী অবস্থানে পৌঁছেছে।
রায়ান্স: জেবিএল, বিটস, বোস ইত্যাদির মত নামী ব্র্যান্ডের তুলনায় জাব্রার বিশেষত্ব কী?
পিটার জয়াসিল্যান: বিশ্বের অন্যতম প্রাচীন অডিও ডিভাইস উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান জাব্রা-জিএন। প্রায় ১৫০ বছরের অডিও মার্কেটে আধিপত্য বজায় রেখেছে। বাংলাদেশের বাজারে ব্র্যান্ড হিসেবে নতুন হলেও ইউরোপে এর যশ ও খ্যাতি বহু পুরনো।
অডিও টেকনোলজির বেশ কিছু অভিনব প্রযুক্তি এসেছে জাব্রার হাত ধরে। ব্লুটুথ হেডফোন, ইয়ার রিং হেডফোন, নয়েজ ক্যান্সেলেশনের মত আধুনিক প্রযুক্তির উদ্ভাবনে অগ্রপথিক জাব্রা। বিশ্বের প্রথম হেডফোন জাব্রা ব্রান্ডেরই ছিল। তাছাড়া টানা ব্যবহারের জন্য বিশেষ এনভাইরনমেন্ট টেকনোলজির সমন্বয় ঘটানো হয়েছে জাব্রার ডিভাইসগুলোয়।
রায়ান্স: অফিস ইকুয়িকপমেন্ট নাকি হোম কমপ্ল্যায়েন্স জাব্রা আসলে কোন ক্ষেত্রে বেশি গুরুত্ব দেয়?
পিটার জয়াসিল্যান: যেহেতু দীর্ঘক্ষণ ব্যবহারের জন্য জ্যাব্রার প্রোডাক্টগুলো ডিজাইন করা হয়ে থাকে। তাই অফিস, ব্যাক্তিসহ পাঁচ ধরণের পরিবেশের উপযোগীতা বুঝে জাব্রা তাদের পণ্য তৈরি করে থাকে। অফিসিয়াল বিভিন্ন ব্যবেহারের ক্ষেত্রে হেডফোন কিংবা অডিও ডিভাইস টানা ব্যবহার করতে হয়। দীর্ঘ ব্যবহারে যাতে শরীর তথা ব্যক্তির কানে কোন বিরূপ প্রভাব সৃষ্টি না করে, বিষয়টি মাথায় রেখেই জাব্রার ডিভাইসগুলো ডিজাইন করা। অনেকে দীর্ঘ সময় হেডফোন লাগিয়ে ঘুরে বেড়ান, তাদের জন্য বিশেষ এয়ার চেম্বার বিশিষ্ট হেডফোন তৈরি করে জাব্রা। পাশাপাশি এর উন্নত অডিও টেকনোলজি নির্দিষ্ট ফ্রিকোয়েন্সির অডিও উৎপাদন করে যা কানের পাশাপাশি মস্তিষ্কে প্রভাব ফেলে না। সুতরাং একই ধরণের পণ্য অফিস ও ব্যক্তির প্রয়োজনে ব্যবহার করতে পারে অনায়াসে। তবে জ্যাব্রার বিশেষত্ব স্পোর্টস ঘরানার পণ্যে। খেলাধুলা বা অনুশীলনের সময় জাব্রা ইয়ারফোন লাগিয়ে যেকেউ যাতে অনায়াসে অডিও উপভোগ করতে পারেন সে জন্য ব্যবহার করা হয়েছে বিশেষ কিছু টেকনোলজি। এই ধরণের ডিভাইসের ইয়ারবাডে সংযুক্ত রয়েছে হার্ট রেট কাউন্টার এবং মোশন সেন্সর যা ব্যক্তির শারিরীক অবস্থার তথ্যেরও জানান দিতে সক্ষম।
রায়ান্স: বাংলাদেশে একটি প্রচলিত ধারণা রয়েছে যে, এই অঞ্চলের জন্য প্রযুক্তি পণ্য আলাদাভাবে তৈরি হয় যা আসলে ইউরোপ, অ্যামেরিকায় যেসব পণ্য পাওয়া যায় সেই মানের নয়। বিষয়টার সত্যতা কতটুকু?
পিটার জয়াসিল্যান: জাব্রা-জিএন ডেনমার্ক ভিত্তিক একটি প্রতিষ্ঠান এবং এর পণ্য উৎপাদিত হয় চীনে। কিন্তু এর ইঞ্জিনিয়ার ও ডিজাইনররা সবাই ইউরোপীয়। আর অঞ্চলভেদে আলাদা কোন পণ্য তৈরি হয় না। একই পণ্য শিপমেন্টের সময় ভিন্ন ভিন্ন দিকে চলে যায়। সুতরাং জাব্রা ব্র্যান্ডের মান নিয়ে প্রশ্ন তোলার কোন অবকাশই নেই।
রায়ান্স: সামগ্রিক দিক বিবেচনা করে বাংলাদেশে জাব্রা’র ভবিষ্যৎ কেমন বলে মনে করেন?
পিটার জয়াসিল্যান: যেহেতু বাংলাদেশে নতুন করে ব্র্যান্ডিং করতে হচ্ছে, সুতরাং কিছুটা সময় লাগতে পারে। যেহেতু টেক মার্কেট ততটা প্রসারিত নয় এখানে। তবে এখানকার ক্রমবর্ধিত বাজার ও অর্থনীতি দারুণভাবে এগিয়ে যাচ্ছে। আর ভাল ব্র্যান্ডের কদরও এখানে ভাল। সব কিছু মিলিয়ে জাব্রা বাংলাদেশের বাজারে ভালভাবেই জায়গা করে নিতে পারবে বলে মনে হচ্ছে।
রায়ান্স: সংক্ষিপ্ত সফরের মধ্যে মূল্যবান সময় দেয়ার জন্য রায়ান্সের পক্ষ থেকে আপনাকে ধন্যবাদ।
পিটার জয়াসিল্যান: আপনাদেরকেও ধন্যবাদ।
No Comments
Leave a comment